শুধুমাত্র জীবিকা নির্বাহ করতে ও ক্যারিয়ার গড়তেই আমাদের জীবনের ৪০ থেকে ৫০ বছর সময় কেটে যায়। আর লম্বা এই সফর পাড়ি দিতে হয় নানারকম ঝুট-ঝামেলার মধ্য দিয়ে। নিজেদের পরিবার গঠন না করা পর্যন্ত, অনেকেই হয়তো স্বাস্থ্য বীমার গুরুত্ব বুঝতে পারে না। তবে, আপনার নিজেকে এবং প্রিয়জনদেরকে যেকোন আর্থিক অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা করার জন্য বীমা পলিসি গ্রহন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা আপনার অবসর জীবনের জন্য একটি নির্ভাবনার ভিত্তি স্থাপন করে।
আপনি পরিবারের মূল উপার্জনকারী হোন বা নাই হোন, আয়ের জন্য আপনাকে অনেক কষ্ট করতে হয়। আপনার ইচ্ছেগুলি বা ভবিষ্যতের স্বপ্নগুলি কীভাবে পূরণ করবেন সেটিও আপনার আয়ের উপর নির্ভর করে। কেউই চায় না অপ্রত্যাশিত কোন অসুস্থতার কারণে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হোক অথবা, তার প্রিয়জনেরা আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়ুক। এইসকল সম্ভাবনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উদ্দেশ্যে এবং আপনার চাহিদাসমূহ সম্পূর্ণরূপে পূরণ করার স্বার্থে আপনার সুরক্ষায় বিনিয়োগ করা উচিৎ।
সাধারণত, ব্যক্তিগত বীমা বাছাই করার ক্ষেত্রে, জনক/জননী অথবা সন্তানহীন যেকোন প্রাপ্তবয়স্ক কর্মজীবীর স্বাস্থ্যসেবা, অবসর জীবন এবং শেষ বয়সের ব্যয়সমূহ কভার করে এমন কোন পরিকল্পনা বিবেচনা করা উচিত। প্রতিটি ব্যক্তির জীবনবিমা করার কারণ ভিন্ন হলেও, এ জাতীয় সকল পরিকল্পনাতেই প্রাপ্তবয়স্ক কর্মজীবীদের একটি মানসিক প্রশান্তি থাকে যে প্রয়োজনের সময় তারা উপযুক্ত সহায়তা পাবেন।
স্বাস্থ্য কাভারেজ:
বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবার ক্রমবর্ধমান ব্যয় বীমা করার প্রয়োজনীয়তাকে আরও উল্লেখযোগ্য করে তুলছে, যেখানে স্বাস্থ্য বীমা নিশ্চিত করছে যেন কোন শারীরিক অসুস্থতা আপনার আর্থিক ধ্বংসযজ্ঞের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়। স্বাস্থ্য বীমার গুরুত্বকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই। এর কারণ শুধু এই নয় যে অসুস্থতা অপ্রত্যাশিতভাবে আসে, অসুস্থতা আপনার এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের উপর লক্ষ্যনীয় আর্থিক প্রভাবও ফেলতে পারে। ৬০ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিগণ হেলথ রাইডার ক্রয় করতে পারেন, যা তাদেরকে স্ট্রোক, ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্নায়বিক সমস্যা সহ কয়েকটি গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবা ও হাসপাতালের খরচ-বাবদ নগদ অর্থ প্রদান করে থাকে। এই সুরক্ষাটি একটি সাধারণ জীবনবিমা পলিসির সাথে অ্যাড-অন হিসাবে বা একটি সমন্বিত পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ক্রয় করা যেতে পারে। কিছু কিছু স্বাস্থ্য বীমা পরিকল্পনায়, আপনি পলিসি চলাকালীন পুরো সময়জুড়ে যদি সুস্থ থাকেন এবং কভারেজটি ব্যবহার করার প্রয়োজন না পরে, তবে আপনি প্রদানকৃত প্রিমিয়ামের পুরো অর্থই ফেরত পাবেন। অসুস্থতার সময়ে আপনি কাজ করতে পারেন না বলে আপনার সঞ্চয় দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়। আর এসকল কারণেই স্বাস্থ্য বীমা করা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
অবসর জীবন পরিকল্পনা :
দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে ভবিষ্যৎ দিনগুলি পুরোপুরি উপভোগ করতে চাওয়াটাই স্বাভাবিক। যেহেতু বাংলাদেশীদের গড় আয়ু ৭২ বছর, অতএব কর্মজীবনের পরে যেন অন্যের উপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল হতে না হয় সেজন্য আরও বেশি মানুষকে নিজেদের জীবনযাত্রার খরচ বহন করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। অবসর জীবন বা পেনশন পরিকল্পনা হল এক ধরণের সঞ্চয়ী মাধ্যম যা আপনাকে আপনার অবসর জীবনের খরচের জন্য ক্রমাগত আয় প্রদান করে এবং একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করে। এমনকি কিছু পরিকল্পনা অতিরিক্ত সুবিধাও প্রদান করে, যেমন- অর্জিত রিভারশনারি ফেরতযোগ্য এবং টার্মিনাল প্রান্তিক বোনাস। এছাড়া, এটি অবসর গ্রহণের আগে মৃত্যুর ক্ষেত্রে গ্যারান্টিযুক্ত অর্থ পরিশোধেরও নিশ্চয়তা প্রদান করে থাকে।
জীবনবিমা :
জীবনবিমা করা কি ঠিক? অবশ্যই, যদি আপনি আপনার অকাল মৃত্যুতে বা কর্মঠ সময়ে স্থায়ী কোন অক্ষমতায় আপনার প্রিয়জনদের আর্থিক সুরক্ষা দিতে চান। মেয়াদী বীমা পরিকল্পনাগুলি আপনার সুবিধাগ্রাহীকে অর্থ পরিশোধের গ্যারান্টি দেয় এবং এই পলিসিগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। আপনার সন্তান বড় হয়ে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হওয়া পর্যন্ত বা, পারিবারিক ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত আপনার পরিবার যে সুরক্ষিত থাকবে, জীবনবিমা পরিকল্পনা সেটি নিশ্চিত করে। একটি সুপরিকল্পিত সঞ্চয় ও বিনিয়োগ পরিকল্পনাই (https://www.metlife.com.bd/solutions/savings-investments/) দীর্ঘ মেয়াদে আপনার পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখতে পারে।
এটি হতে পারে কোন স্থায়ী বা সম্ভাবনাময় জীবন পরিকল্পনা, যা আপনাকে কোন অসুস্থতার ক্ষেত্রে সাধারণ বীমা সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি জীবনের যেকোনো সমস্যা হতে সুরক্ষিত রাখবে। একবার যদি পলিসিটি কোন অসুস্থতা কভার করা ব্যতিরেকে মেয়াদপূর্ত হয়, তাহলে পলিসি গ্রাহক তাদের প্রদানকৃত প্রিমিয়ামের পুরো অর্থই ফেরত পান। কিছু পরিকল্পনা পলিসি মেয়াদপূর্ত হওয়ার আগে অভিহিত মূল্যের একটি শতকরা অংশ প্রদানের সুযোগও দিয়ে থাকে।
কর্মজীবনের চরম সময়গুলোতেই আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনি যেকোন অনিশ্চয়তা হতে সুরক্ষিত এবং অবসর জীবনের জন্য আর্থিকভাবে প্রস্তুত। আপনার জন্য উপযুক্ত বীমা কোনটি সেটি জানতে একজন ফিন্যান্সিয়াল এসোসিয়েটের সাথে পরামর্শ করুন।